বান্দুং সম্মেলন?

 

  • বান্দুং সম্মেলন

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের বান্দুং সম্মেলন প্রথম আফ্রো-এশীয় দেশগুলির মধ্যে অনুষ্ঠিত সম্মেলন ছিল। ২৯টি আফ্রো-এশীয় দেশ বান্দুং সম্মেলনে যোগদান করেছিল। এর মধ্যে ১৪টি দেশ নির্জোট আন্দোলনের বেলগ্রেডের শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেছিল। বান্দুং সম্মেলনে আসে মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের প্রতিনিধিরা। তাঁরা সমবেত হয়ে বান্দুং সম্মেলনের সময় এবং সদস্যপদ সম্পর্কে কতকগুলি নীতি নির্ধারণ করেন। এই সম্মেলনে স্থির হয় যে, মুখ্য প্রতিনিধীরা জনসমক্ষেই তাদের বক্তব্য রাখবেন। কোনও ব্যাপারে ঐক্যমত আছে কিনা তা নির্ণয় করবেন সম্মেলনের চেয়ারম্যান। এখানে কোনওরকম ভোটাভুটির ব্যাপার ছিল না। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সংগঠক রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত প্রতিনিধিদের তিনটি কমিটিতে ভাগ করা হয়। সম্মেলনে একটি সচিবালয়ও প্রতিষ্ঠা করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার একজন প্রতিনিধি সেক্রেটারি জেনারেল-এর পদে আসীন হয়। বান্দুং সম্মেলনে যেসব বিষয়গুলি আলোচিত হয় তার মধ্যে মুখ্য বিষয় ছিল বিশ্বশান্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। মানবাধিকার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক স্তরে সহযোগিতা।

বান্দুং সম্মেলনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি অনুসরণ করার প্রস্তাব নেওয়া হয়। এগুলি হল

. মৌলিক মানব অধিকার এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে সংশোধিত উদ্দেশ্য লক্ষ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।

. সকল রাষ্ট্রের সার্বভৌম অধিকার আঞ্চলিক অখণ্ডতা স্বীকৃতি।

. ছোট বড় সকল বর্ণ জাতির সমান অধিকার।

8. অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।

. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদ অনুসারে একক বা যৌথভাবে সমস্ত জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি।

. যৌথভাবে কোনও বৃহৎ শক্তির প্রতিরক্ষার স্বার্থ পালন থেকে বিরত থাকা

9. এবং এক রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য রাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি না করা। অন্য দেশের স্বাধীনতাকে কোনও ভাবেই বিপন্ন না করা।

. শান্তিপূর্ণ উপায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা।

. পারস্পরিক স্বার্থ সহযোগিতা।

১০. আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

Post a Comment

0 Comments