- ক্ষতিপূরণ সমস্যা?
ভার্সাই চুক্তির সমর্থনের পরবর্তী পর্যায়ে বেশ কিছু ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন। ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ কেইনস-এর বক্তব্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন E Mantoux । কেইনস-এর মূল বক্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত হননি। জার্মানির পক্ষে ভার্সাই চুক্তি অনুযায়ী এই বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করা সম্ভব হত না। ১৯৩০ এর দশকে জার্মানি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ধরনের অগ্রগতি ঘটিয়েছিল তা থেকে বোঝা যায় যে জার্মানির অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অগ্রগতি ঘটানোর মত অন্তর্নিহিত শক্তি বা ক্ষমতা ছিল। ১৯২৯ এ জার্মানি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যে অগ্রগতি সাধন করে তার দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে মাস্ত দেখাবার চেষ্টা করেছেন যে এই চুক্তি মোটেই শাস্তিমূলক বা ক্ষতিকারক ছিল না। তাছাড়া ক্ষতিপূরণ কমিশন নানা ভাবেই জার্মানিকে সাহায্য করেছিল যাতে জার্মানি দেখিয়েছে- ১৯২০-১৯৩১ এই সময়কালের মধ্যে জার্মানিতে ৩৫-৩৮ মিলিয়ার্ড মার্ক এর আমদানি ঘটে ঋণস্বরূপ অথচ ওই সময়ের মধ্যে জার্মানি মিত্রপক্ষকে প্রদান করে ২১ মিলিয়ার্ড মার্ক। ১৯২০-র শুরুতে জার্মান মার্কের মূল্যমান অত্যন্ত কমে যাওয়ার দরুণ যে সংকটের সূত্রপাত ঘটে তা ক্ষতিপূরণের ফলে ঘটেনি, আসলে যুদ্ধ সংক্রান্ত অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা এবং মোট ঋণ পরিশোধজনিত সমস্যার ফলে তীব্রতম মুদ্রাস্ফীতির কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছিল। সাম্প্রতিককালে অনেক গবেষকই মনে করেন যে জার্মানির ওপর ক্ষতিপূরণের দাবি অতিরিক্ত কঠোর ছিল না। তাছাড়া জার্মানি যাতে সময়মত ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করতে পারে তার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে নানান ধরনের সাহায্য প্রদান করা হয়েছিল। যুদ্ধের ফলে এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি সব দেশগুলিকেই কম বেশি বিপর্যস্ত করেছিল। এই জাতীয় বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য জার্মানিকেই দায়ী করা হয়েছিল।
0 Comments