বাংলা বেদ: [ঋগ্বেদ ১।১] ।।৩ সুক্তঃ

 বাংলা বেদ: [ঋগ্বেদ ১।১]  ।।৩ সুক্তঃ

সুক্তঃ

अश्विना यज्वरीरिषो दरवत्पाणी शुभस पती |
पुरुभुजाचनस्यतम ||
अश्विना पुरुदंससा नरा शवीरया धिया |
धिष्ण्या वनतं गिरः ||
दस्रा युवाकवः सुता नासत्या वर्क्तबर्हिषः |
यातंरुद्रवर्तनी ||
इन्द्रा याहि चित्रभानो सुता इमे तवायवः |
अण्वीभिस्तना पूतासः ||
इन्द्रा याहि धियेषितो विप्रजूतः सुतावतः |
उप बरह्माणि वाघतः ||
इन्द्रा याहि तूतुजान उप बरह्माणि हरिवः |
सुते दधिष्वनश्चनः ||
ओमासश्चर्षणीध्र्तो विश्वे देवास गत |
दाश्वांसो दाशुषः सुतम ||
विश्वे देवासो अप्तुरः सुतमा गन्त तूर्णयः |
उस्रा इवस्वसराणि ||
विश्वे देवासो अस्रिध एहिमायासो अद्रुहः |
मेधं जुषन्त वह्नयः ||
पावका नः सरस्वती वाजेभिर्वाजिनीवती |
यज्ञं वष्टु धियावसुः ||
चोदयित्री सून्र्तानां चेतन्ती सुमतीनाम |
यज्ञं दधे सरस्वती ||
महो अर्णः सरस्वती पर चेतयति केतुना |
धियो विश्वा वि राजति ||

অনুবাদঃ
১। হে ক্ষিপ্রপাণি, শুভকর্মপালক, বিস্তীর্ণ ভুজ বিশিষ্ট অশ্বিদ্বয় () ! তোমরা যজ্ঞের অন্ন কামনা কর।
২। হে বহুকর্মা, নেতা, বিক্রমশালী অশ্বিদ্বয়! অপ্রতিহত বুদ্ধির সঙ্গে আমাদের স্তুতি গ্রহণ কর।
৩। হে দস্রদ্বয়! হে নাসত্যদ্বয় () ! হে রুদ্রবর্ত্মন, অশ্বিদ্বয়! মিশ্রিত সোমরস অভিযুত হয়েছে, ছিন্ন কুশে স্থাপিত হয়েছে, তোমরা এস।
৪। হে বিচিত্র দীপ্তিবিশিষ্ট ইন্দ্র! আঙুল দিয়ে অভিষুত নিত্যশুদ্ধ (সোমরস) তোমাকে কামনা করছে, তুমি এস।
৫। হে ইন্দ্র! আমাদের ভক্তিদ্বারা আকৃষ্ট হয়ে, মেধাবীদের দ্বারা আহুত হয়ে অভিষবকারী ঋত্বিকের স্তোত্র গ্রহণ করতে এস। ৬। হে অশ্বযুক্ত ইন্দ্র! তরান্বিত হয়ে স্তোত্র গ্রহণ করতে এস; সোমাভিষবযুক্ত যজ্ঞে আমাদের অন্ন ধারণ কর।
৭। হে বিশ্বদেবগণ () ! তোমরা রক্ষক, মনুষ্যগণের পালক, তোমরা হব্যদাতা যজমানের অভিষুত সোম গ্রহণ করতে এস; তোমরাই যজ্ঞের ফলদাতা।
৮। রেপ সূর্য রশ্মি দিনে আসে, বৃষ্টিদাতা বিশ্বদেবগণ ত্বরান্বিত হয়ে সেরুপ অভিযুত সোমরসে আগমন করুন।
৯। বিশ্বদেবগণ ক্ষয়রহিত সদা বর্তমান; তাঁরা অকল্যাণরহিত ধনবাহক; তাঁরা যেন যজ্ঞ সেবন করেন।
১০। পবিত্রা, অন্নযুক্তষজ্ঞবিশিষ্টা, যজ্ঞফলরূপধনদাত্রী সরস্বতী () আমাদের অন্নবিশিষ্ট যজ্ঞ কামনা করুন।
১১। সুনৃত বাক্যের উৎপাদয়িত্রী, সুমতি লোকদের শিক্ষয়িত্রী সরস্বতী আমাদের যজ্ঞ গ্রহণ করেছেন।
১২। সরস্বতী প্রবাহিত হয়ে প্রভূত জল সৃজন করেছেন, এবং সকল জ্ঞান উদ্দীপন করেছেন।

টীকাঃ
১। প্রকৃতির কোন দৃশ্যকে অশ্বিদ্বয় নাম দিয়ে প্রাচীন হিন্দুগণ উপাসনা করতেন? যাস্ক নিরুক্ততে সে বিষয়ে লিখেছেন তৎ কৌ অশ্বিনৌ। দ্যাবা পৃথিব্যো ইতি একে, অহোরত্রৌ ইতি একে, সূর্যাচন্দ্রমসৌ ইতি একে। রাজনৌ পুণ্যকৃতৌ ইতি ঐতিহাসিকাঃ। যাস্কের নিজের মত যতদুর বুঝা যায বোধ হয় অর্ধরাত্রির পর প্রাত:কালের পূর্বে যে আলোক অন্ধকারে বিজড়িত থাকে তাই অশ্বিদ্বয়। ঊষার পূর্বে মিশ্রিত আলোক অন্ধকার যদি যমজদেব বলে উপাসিত হন তবে তাঁদের অশ্বী নাম দেওয়া হল কেন? এটি একটি বৈদিক উপম মাত্র। সূর্যের আলোক আকাশে ধাবমান হয়, উষার আলোক আকাশে ধাবমান হয়, সে জন্য সে আলোক বা রশ্মি সমূহকে ঋগ্বেদে সর্বদাই অশ্বি বলে বর্ণনা করা হয়েছে, এবং সূর্য ঊষাকে অশ্বযুক্ত বলে সম্বোধন করা হয়েছে। অশ্বিন শব্দেরও সেই অর্থ, অশ্বযুক্ত অর্থাৎ আলোকযুক্ত।
২। দস্রা। শত্রুণামুপক্ষয়িতারৌ যদ্বা দেববৈদ্যত্বেন রোগাণামুপক্ষয়িতারৌ অশ্বিনৌ বৈ দেবানাং ভিষজৌ ইতি শ্রুতে: সায়ণ। নাসত্যা। অসত্যমনৃতভাষণং। তদ্রহিতৌ। সায়ণ। দস্রা নাসতা দৃষ্টি শব্দ সর্বদাই অশ্বিদ্বয় সম্বন্ধে প্রয়োগ হয়।
৩। বিশ্বোদেবাস এতন্নামকা দেববিশেষা: সায়ণ।
৪। সর: অর্থ জল, সরস্বতীর প্রথম অর্থ নদী এতে সন্দেহ নেই; আর্যাবর্তে সরস্বতী নামে যে নদী আছে তাই প্রথমে সরস্বতী দেবী বলে পূজিত হয়েছিলেন। এক্ষণে গঙ্গা যেরূপ হিন্দুদের উপাস্যা দেবী, প্রথম হিন্দুদের পক্ষে সরস্বতী সেরূপ ছিলেন। অচিরে সরস্বতী বাপ্দেবীও হলেন। যাস্ক বলেছেন তত্র সরস্বতী ইতি এতস্য নদীবন্দোতাবচ্চ নিগমা ভবন্তি। মূল ঋগ্বেদেও সরস্বতীর উভয় প্রকার গুণ লক্ষিত হয়। পুরাকালে সরস্বতী নদীতীরে যজ্ঞ সম্পাদন হত এবং মন্ত্র উচ্চারিত হত, ক্রমে সে সরস্বতী নদী সে পবিত্র মন্ত্রের দেবী বাপ্দেবী বলে পরিণত হলেন।

Post a Comment

0 Comments