বাংলা বেদ: ঋগ্বেদ সংহিতা (রমেশচন্দ্র দত্ত) : প্রথম মণ্ডল(2সুক্ত-) প্রথম মণ্ডল : বিভিন্ন ঋষি [ঋগ্বেদ ১।১] ২ সুক্ত।।

  বাংলা বেদ:

 ঋগ্বেদ সংহিতা (রমেশচন্দ্র দত্ত) :

প্রথম মণ্ডল(2 সুক্ত)

প্রথম মণ্ডল : বিভিন্ন ঋষি
[ঋগ্বেদ ১।১]

সুক্ত।।

वायवा याहि दर्शतेमे सोमा अरंक्र्ताः |
तेषां पाहि शरुधी हवम ||
वाय उक्थेभिर्जरन्ते तवामछा जरितारः |
सुतसोमा अहर्विदः ||
वायो तव परप्र्ञ्चती धेना जिगाति दाशुषे |
उरूची सोमपीतये ||
इन्द्रवायू इमे सुता उप परयोभिरा गतम |
इन्दवो वामुशन्ति हि ||
वायविन्द्रश्च चेतथः सुतानां वाजिनीवसू |
तावा यातमुप दरवत ||
वायविन्द्रश्च सुन्वत यातमुप निष्क्र्तम |
मक्ष्वित्था धिया नरा ||
मित्रं हुवे पूतदक्षं वरुणं रिशादसम |
धियं घर्ताचीं साधन्ता ||
रतेन मित्रावरुणाव रताव्र्धाव रतस्प्र्शा |
करतुं बर्हन्तमाशाथे ||
कवी नो मित्रावरुणा तुविजाता उरुक्षया |
दक्षं दधाते अपसम ||

অনুবাদঃ

১। হে দর্শনীয় বায়ু () এস, সোমরস সমূহ () অভিযুত হয়েছে; পান কর, আমাদের আহ্বান শ্রবণ কর।

২। হে বায়ু! যজ্ঞাভিজ্ঞ স্তোতাগণ সোমরস অভিযুত করে তোমার উদ্দেশ্য স্তুতিবাক্য প্রয়োগ স্তব করছে।

৩। হে বায়ু! তোমার সোমগুণপ্রকাশক বাক্য সোম পানার্থ হব্যদাতা যজমানের নিকট আসছে, অনেকের নিকট আসছে।

৪। হে ইন্দ্র () বায়ু! সোমরস অভিযুত হয়েছে, অন্ন নিয়ে এস: সোমরস তোমাদরে কামনা করছে।

৫। হে বায়ু ইন্দ্র! তোমরা অভিযুত সোমরস জান, তোমরা অন্নযুক্ত হব্যে বাস কর; শীঘ্র নিকটে এস।

৬। ?

৭। হে বায়ু ইন্দ্র! অভিষবকারী যজমানের অভিযুত সোমরসের নিকটে এস; হে বীরদ্বয়! কাজ ত্বরায় সম্পন্ন হবে।

৮। পবিত্রবল মিত্র হিংসকশত্রুনাশক বরুণকে () আমি আহ্বান করি; তাঁরা ঘৃতাহুতি প্রদান রূপ কর্ম সাধন করেন।

৯। হে যজ্ঞ বর্ধয়িতা যজ্ঞস্পর্শী মিত্র বরুণ! তোমরা যজ্ঞফল দানার্থ বৃহৎ লোকের আশ্রয়ভূত; তাঁরা আমাদের বল কর্ম পোষণ করেন।

টীকাঃ

১। বায়ুও আদিম আর্যগণের আরাধ্য দেব ছিলেন, সুতরাং সে জাতির ভিন্ন ভিন্ন শাখার মধ্যে পূজনীয় ছিলেন। প্রাচীন ইরানীয়দের অবস্থা নামক জেন্দ ভাষায় লিখিত ধর্ম পুস্তকে বায়ু দেবের উল্লেখ আছে। প্রথম সুক্তের প্রথম ঋকের টীকার যাস্কের নিরুক্ত হতে যে অংশ উদ্বৃত হয়েছে তাতে প্রাচীন হিন্দুদের প্রধান দেবগণের মধ্যে বায়ুর নাম আছে।

২। সোমলতা পেষণ করলে দুগ্ধের ন্যায় শ্বেতবর্ণ এবং ঈষৎ অম্লরস নির্গত হয়, তাই মাদক অবস্থায় পরিণত করে পূর্বকালে যজ্ঞে ব্যবহৃত হত। প্রাচীন আর্যদের মধ্যে সোমরসের ব্যবহার ছিল, অতএব সে আর্য জাতির শাখা ইরানীদের মধ্যে সোমের ব্যবহার উপানসা ছিল। তারা সোমকে হওমা বলতেন যজ্ঞে এর অভিষব দিতেন। বোধ হয় ইরানীয় আর্যগণ সোমরস স্বাভাবিক অবস্থায় (unfermented)ব্যবহার করতেন এবং হিন্দু আর্যগণ সোমরস মাদক অবস্থায় (fermented) পান করতে ভাল বাসতেন এবং দুই আর্যজাতির বিবাদের এটি একটি কারণ।

৩। ভারতবর্ষে নদীর জল ভূমির উর্বরতা, ধান খাদ্য দ্রব্য, মানুষের সুখ জীবন; সমস্তই বৃষ্টির উপর নির্ভর করে, অতএব বৃষ্টিদাতা আকাশদেব ইন্দ্রের গেৌরব অধিক। তাঁর নাম যাস্ক হতে উদ্বৃত সূত্রে আছে, এবং তাঁর সম্বন্ধে যত সুক্ত আছে, অন্য কোন দেব সন্বন্ধে তত নেই।


৪। মিত্র আর্যদিগের একজন উপাস্য দেবতা ছিলেন সুতরাং প্রাচীন হিন্দু ইরানীয় উভয় শাখার মধ্যে তাঁর অর্চনা দেখা যায়। ইরানীয়দের মধ্যে মিথ্যা আলোক বা সূর্য বলে পুজিত হতেন, হিন্দুদের মধ্যে মিত্্আলোকে বা দিবা বলে পূজিত হতেন। বরুণ আর্যদের আরও পুরান দেবতা। আবরণকারী (বৃধাতু হতে) নৈশ আকাশকেই আর্যগণ বরুণ বলে পূজা করতেন, এবং সে দেবকে গ্রীকগণ Uranos, ইরানীয়গণ বরণ হিন্দুগণ বরুণ নামে জানেন। মৈত্রং বৈ অহরিতি শ্রুতো** শ্রুয়তে বারুণী রাত্রী। সায়ণ। আকাশ জলীয়, বিস্বাস হতে অবশেসে বরুণ জলের দেব বলে পরিগণিত হলেন।


Post a Comment

0 Comments