ভারতের মুসলমানদের অতীত সমাজ ও সংস্কৃতি : পাট-01

ভারতের মুসলমানদের অতীত সমাজ ও সংস্কৃতি : পাট-01
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏👁👁👁👁👁👁👁👁👁👁👁
সিপাহি যুদ্ধের পর দ্বিতীয় বারের জন্য বাংলা তথা ভারতের মুসলমানরা গভীর খাদে পড়ে যায়। নবাবী আমলে এবং শেষের দিকে মোঘল বাদশাহদের প্রতিকী শাসন রাজ কাজে সৈনী বাহিনীতে ক্রমশ কমতে লাগল মুসলমানের চাকুরী, ১৮৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে মুসলমানের জমিদারী ব্যবস্থায় ভাটা পড়ল। ১৮১৮ খৃষ্টাব্দে রাজা বাদশাহদের দেওয়া নাখেরাজ সম্পত্তি বাজায়াপ্তের ফলে উচ্চ ও মধ্য বিত্ত মুসলমানের সর্বনাশ ঘনিয়ে এল।
১৮৩৭ সালে ফারসীর বদলে রাজভাষা হল ইংরেজী এবং ইংরাজী ও দেশীয় ভাষায় রাজকার্য শুরু হল। বিচার বিভাগে মুসলমানদের চাকুরী হল সংকুচিত। হান্টার সাহেব নিজে বলেছেন ইংরেজরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সৈন্য বাহিনীতে মুসলিমদের হেঁটে ফেলেছে। মুরশিদাবাদের মত জেলায় ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে ৮% মুসলিম ছাত্র পড়াশুনা করত স্কুলে। মুসলিম আরবী পড়া স্কুলেও হিন্দু সংখ্যাধিক্য।
সাধারণ শিক্ষায় শুধু মুসলিম পিছিয়ে নয় ইসলামী শিক্ষায় ও সংস্কৃতিতে তারা এখনও দারুণ ভাবে পিছিয়ে। সদ্য ধর্মান্তরীত মুসলমান নিজেদের সপ্তপুরুষের চালচলন ছাড়তে পারছে না। হিন্দুদের পুজো পার্বণে তারা আনন্দ ফুর্তি করত। বল হরি বোল বলে শ্মশানে দাহ করতে যেত হিন্দু মৃতদেহকে। শাঁখা চুড়ি পরত মাথায় সিদুর দিত। বিবাহে ঢোল তবলা বাজাত। লক্ষ লক্ষ দরগাহ মুসলিম দ্বারা গড়ে উঠে। নানা ভণ্ড পীর দেখা যায়। দেখ যায় কবর সিজদাহ, শরিয়ত বিরোধী কার্যকলাপে ইসলামে ছয়লাপ।
এই সময় ওহাবী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল ভারতবর্ষে। ভারতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেন সৈয়দ আহমদ শহীদ (১৭৮৬-১৮৩১) বাংলায় নেতৃত্ব দিলেন মীর নিসার আলি (তিতুমীর) ১৭৮২-১৮৩১। হাজী শরিয়তুল্লাহ (১৭৮০-১৮৩৯) আর একটি ইসলাম সংস্কার মূলক কাজে নেতৃত্ব দিলেন। এটা ফরাজী আন্দোলন নামে খ্যাত। এই দুই আন্দোলন উনিশ শতকে নবজাগরণের আন্দোলন বলা যায়, বাংলার মুসলিম সমাজে। ধর্ম রেখে আধুনিক পথে আন্দোলনের ডাক দিলেন স্যর সৈয়দ আহমদ। (১৮১৭- (১৮৯৮) স্যর আহমদ বুঝেছিলেন আধুনিক শিক্ষা ছাড়া মুসলমানরা টিকতে পারবে না। আলিগড় এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন। পরে কলেজ (১৮৭৫) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নিল। বাংলায় সৈয়দ আহমদের অনুরূপ ভূমিকা নিল স্যর আব্দুল লতিফ (১৮২৮ - ১৮৯৩) যাঁর চেষ্টায় হিন্দু কলেজে মুসলিম ছাত্ররা প্রবেশাধিকার পায়। হিন্দু কলেজ পরবর্তিতে প্রেসিডেন্সি কলেজের রূপ নেয় এবং পরবর্তিতে এখানকারের একমাত্র মুসলিম ছাত্র ড. কুদরতে খোদা প্রিন্সিপাল হন। নবাব লতিফ সাহেবের প্রচেষ্টায় কলকাতা মাদ্রাসার এ. পি. বিভাগ খোলা হয় (১৮৬৭) এম. এ. ক্লাস চালু হয় ১৮৮৪ সালে। এটি ১৮৮৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে স্থানান্তরিত হয়। মহসিন ফান্ডের টাকায় মহসিন কলেজ পরিচালিত হত সেটা সরকারী হাতে তুলে দিয়ে ঐ টাকায় তিনটি মাদ্রাসা খোলা হয়।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
পরের অংশ আগামীকাল ঠিক এই সময় পড়ার জন্য ধন্যবাদ -আব্দুল মুসরেফ খাঁন। পরবতী পর্ব_02👉https://www.facebook.com/share/p/1DhoWn3nP2/
#ইসলাম #মুসলমান

Post a Comment

0 Comments