ভারতীয় মুসলমানদের অতীত সমাজ সংস্কৃতি : পাট-3
👁👁👁👁👁👁👁👁👁👁
ডঃ বিধান চন্দ্র রায় তখন মেডিকেলের ছাত্র হঠাৎ কলেজে আসার সময় এক ঘোড়ায় টানা ট্রাম গাড়ীর সংগে ঘোড়ার গাড়ীর ধাক্কা হল। ঘোড়ার গাড়ীর আরোহী ছিলেন কর্ণেল পেগ সাহেব যিনি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, বিধান রায়কে দেখে তিনি বলেন, আমি ট্রাম কোম্পানির বিরুদ্ধে কেস করব তোমাকে সাক্ষ্য দিতে হবে। বিধান রায় বললেন, আমি মিথ্যা কথা বলতে পারব না সত্য কথা বলব এখানে দোষ ছিল ঘোড়ার গাড়ীর। এ সত্য বলার ফলশ্রুতিতে মৌখিক পরীক্ষায় বিধান চন্দ্র রায়কে ফেল করতে হয়।
ইংরেজ ডাক্তার যারা ভারতে ডাক্তারী ও শিক্ষকতা করতেন তাঁদের দেখলে ভারতীয় ডাক্তার ছাত্রদের টুপি খুলে সম্মান সূচক সম্বোধন করতে হত। ডঃ বিধান রায় তা না করে বলেন ইংলণ্ডে এ ব্যবস্থা নেই ভারতে যদি এটা করতে হয় লিখিত নির্দেশ জারী করা হোক। কেননা ইংলন্ডে ইংরেজের এক আইন, ভারতে এক আইন চালু ঠিক নয়। ইংরেজ অধ্যাপকদের দেখলেই ভারতীয়দের ছাতা মুড়ে দিতে হত। এই প্রথার বিরুদ্ধে
বিধান রায় প্রতিবাদ করেন এবং রদ হয়। বিধান চন্দ্রা রায় স্কলারশিপ নিয়ে ইংলন্ডে পড়তে গেলেন, তখনকার দিনে যেমনি নিয়ম ছিল একসংগে ৩ টি বিষয়ে অনার্স নেওয়া যেত তেমনি ডাক্তারীতে তিনটি বিষয় একত্রে পড়া যেত। বিধান চন্দ্র রায় তিনটি বিষয়ে ভর্তি হতে চাইলে ভারতীয় ও বাঙালী হিসাবে বিধান রায়কে ভর্তি করতে চাইলেন না। বিধান চন্দ্র রায় স্বপক্ষে অনুরোধ করলেন 'আমি পারব সার' এভাবে ৩০দিনে ৩২ বার গিয়ে অনুরোধ করেন। ছাত্রের পড়ার মানসিকতা ও আগ্রহ দেখে কলেজের অধ্যক্ষ ভর্তি করেন নেন। পরীক্ষায় দুটো বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম ও একটি বিষয়ে প্রথম শ্রেণি পেয়ে উত্তীর্ণ হন (১৯১১ খৃষ্টাব্দে)।
মেডিকেল কলেজের দেওয়ালে লেখা বাণীকে ডঃ রায় কোনদিন ভোলেননি 'Whatever thy hands findeth to do, do it with thy might.' অর্থাৎ যখন যে কাজ তোমার হাতে আসবে, সেটি তোমার সর্বশক্তি দিয়ে সম্পন্ন করবে।'
কলকাতা প্রেসিডেন্সির ছাত্র হুমায়ুন কবির ছিলেন এশিয়ার মুসলিমদের মধ্যে প্রথম ট্রাইপোজ। প্রেসিডেন্সি ও বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। ভারতের শিক্ষামন্ত্রী, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ছিলেন, ইনি ছোট খাট মানুষ ছিলেন। জীবনে তিনটে জিনিয়াকে মেনে চলতেন Punctuality, Perseverance and activity. তাঁর সময় জ্ঞান সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা, একটা অনুষ্ঠানে তাঁর ৪টায় হাজির হবার কথা। হাজির হলেন পাঁচ মিনিট পূর্বে সে সময় সভাস্থলে উপস্থিত না হয়ে গাড়ী থেকে নেমে অপেক্ষায় থাকলেন চারটে বাজার, চারটে বাজলে স্টেজে গিয়ে হাজির হলেন। ইনিই হয়েছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের প্রথম সেক্রেটারী। ইনি নোট নিয়ে লিখে ছিলেন আজাদের বিখ্যাত বই India wins freedom প্রত্যেক দিন রাত নটার পর মওলানা আজাদ বসে উর্দুতে বলতেন, হুমায়ুন কবির লিখে নিয়ে পরে রাতের মধ্যে ইংরাজী করে আজাদকে শোনাতেন তারপর রাত ১২ টায় ১টায় বাড়ি ফিরতেন কবির।
আজাদ যেমনি ছিলেন নিয়মানুবর্তিতার প্রতীক তেমনি দৃঢ়চেতা জাতিয় নেতার প্রতীক। কংগ্রেস সভাপতিকে বলা হত ভারতের রাষ্ট্রপতি। মাত্র ৩৫ বছরে ১৯২৩ খৃষ্টাব্দে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। যখন তাঁর চেয়ে বয়স্ক, ভারতীয় খ্যাতিমান ব্যারিষ্টার, বিশ্বখ্যাত ডাক্তার হিসাবে পরিচিতজনরা আছেন। তেজ বাহাদুর সেপ্রু আছেন, মতিলাল নেহরু, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, লালা লাজপৎ রায়, বাল গঙ্গাধর তিলক, বিপিনচন্দ্র পাল, দেশবন্ত চিত্তরঞ্জন আরো অনেকে এমন কি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ। শুধু তাই নয় পরে একটানা ছ'বার কংগ্রেসের সভাপতি হন। ত্রিপুরা কংগ্রেসে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বিরুদ্ধে গান্ধী অনুরোধ উপেক্ষা করে উনি রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড়াননি, । সুভাষবাবুর কাছে সীতারামাইয়া পরাজিত হলে গান্ধি বলেন, সীতারামাইয়ার পরাজয় আমার পরাজয় স্বাধীনতার সময় ভারতের কংগ্রেস সভাপতি মওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং সমগ্র ভারতবাসীদের কোণে তিনিই রাষ্ট্রপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির ভারতের মন্ত্রিসভার সদস্য। অশিক্ষার অন্ধকারে ঢাকা এই ভারতবর্ষের শিক্ষার ভার তুলে নেন। এই ধর্মনিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদী, আপোষহীন সকলের গ্রহণযোগ্য, অসমসাহসী, স্বয়ং শিক্ষিত মানুষটির ওপর। ঐতিহাসিকের কলমে পাওয়া মন্ত্রীমশায়ের ঘরটি বিরাট। তার এক প্রান্তে মোগল সম্রাটের মত রাজকীয় চেহরা নিয়ে মওলানা আজাদ বসে আছেন। ওঁর সামনের টেবিলটিতে কাগজপত্র কিছু নেই। শুনতাম ওঁকে ফাইলের বক্তব্য মুখে মুখে সংক্ষেপে বলা হত। উনি সব শুনে নিয়ে উর্দুতে নোট দিতেন আদেশ বা মন্তব্য লিখে দিতেন। কখনও বা ওঁর মৌখিক আদেশ অন্য কেউ লিখে নিত, উনি শুধু উর্দুতে সই করে দিতেন। ওঁর সামনে এসে মনে হল যেন সত্যিই রাজসমীপে উপস্থিত হয়েছি, সাউথ ব্লকের বিশাল অফিস ঘরটি হঠাৎ যেন লালকেল্লার দেওয়ানি-খাস এ পরিণত হয়েছে। চারদিকে তাকালেই দেখতে পাব আশাসাটা ঢাল- তলোয়ার বল্লম হাতে সব সাহায্যকারী আর দেহ রক্ষিরা দাঁড়িয়ে আছে। এক বিরাট ব্যক্তিত্বের মুখোমুখি হয়ে সত্যিই কেমন যেন বিহ্বল লাগছিল। মন্ত্রী বোধ হয় আমার অবস্থাটা বুঝতে পেরেছিলেন। দেখলাম ওর মুখে মৃদু হাসি। সেক্রেটারী সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললাম জনাবকে বলুন আমি উর্দু বুঝি কিন্তু বলতে পারি না। সেজন্য লজ্জিত। মওলানা সাহেব ইংরাজি ভাল জানলেও উর্দু ভাষায় ছাড়া অন্য কোন ভাষা কথা বলতেন না। হাত তুলে উনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন। কিন্তু ও দিনটির স্মৃতি আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে। সে স্মৃতি রাজদর্শনের, সে রাজা মহামানবও বটে।
১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের শতবর্ষে কেন্দ্রিয় শিক্ষা দপ্তর থেকে সুরেন্দ্রনাথ সেন কর্তৃক মহা বিদ্রোহের এক প্রামাণ্য বিবরণী লেখান হয়। The Publications Division Ministry of Information & Broadcasting, Government of India. By Surendra nath Sen with a foreword by Maulana Abul Kalam Azad, ২৫ পৃষ্ঠার আজাদ সাহেবের মুখবন্ধ সহ ৪৮১ পৃষ্ঠার বড় সাইজের বড়। মুখবন্ধ Foreward - এ আজাদ লেখেন
We have to remember that in 1857 Bahadur Shah was hardly any- thing more than a Puppet. His way did not extend beyond the Delhi fort. Even the city of Delhi was largely outside his control. He lived on a monthly grant of rupees one lakh paid to him by the east India Company. Not only he but immediate Predecessors had been mere titu- lar rulers. He had neither army nor-treasure. Nor had he any influence of Power. The only thing in is favour was that he was a descendant of Akbar and Shah Jahan
The loyalty which the of India offered to Bahadur Shah was not to him as a person but to the descendant of the great Moghuls. The Mughal court had made such a abiding impression on the Indian mind that
When the question arose who should take over the power from the British Hindus and muslims with one voice selected Bahadur Shah. This gives as an idea of the deep roots the empire established by Babur and consolidated by Akbar had struck in India. Indians obviously looked upon the Mughals not as foreign rulers but as their own king Emperors. Unfortunately for India, Bahadur Shah was not fit to serve as symbols. He was so weak the he could not control either the soldiers or the nobility. In spite of his personal failings no thought of an alter- native to him. Till the very end, the soldiers and the people looked to Bahadur Shah as the head of the State. In September 1857, The British again captured Delhi. Bakht Khan then appealed to Bahadur Shah to leave the city and rally forces outside. He pleaded with the Emperor that the cause was not yet lost. Rohilkhand was till intact and so was Oudh. Bahadur Shah could not however rise to the occasion and again failed. Besides, the British had got hold of the traitor Ilahi Bakshi who persuaded Bahadur Shah to stay on. In the end, he was arrested and this was the end of the nationwide organised resistance.
New Delhi February 9th 1957
A. K. Azad Minister for Education Natural Resources and Scientific Research Government of India
পেভারেল মুনির আধুনিক ইতিহাসে স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। বইটি সমালোচনার জন্য মুনির কাছে পাঠান হয় মুনির সুরেন্দ্রনাথের লেখার প্রশংসা করলেও মন্ত্রি থেকে আবুল কালাম আজাদের মুখবন্ধের সমাা বাচনা করেন। মৌলানার ভূমিকা অনৈতিহাসিক বলে বর্ণনা করেন। শিক্ষা দপ্তরের মুখপত্রে শিক্ষামন্ত্রি সমালোচনা, আজাদ যে ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন সকলে হাহাকার করে উঠল। মন্ত্রির মতামত চেয়ে আমাদের কাছে পাঠাবার আগে মুনির কাছে পাঠিয়ে সুরটা নরম করার কথা বললে মুনির বলেন। 'না ছাপলেই নামওলানা আজাদ সমালোচনা দেখে, নির্দ্বিধায়। আর কোন আপত্তি নেই। আজাদ ছিলেন এতটাই ভারতের স্বাধীনতা আজ জীবনে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে ছিলেন আজমল খান • আজহার • ম আব্দুর রহিম হাফিজ • মৌলবী আব্দুর ●ল গফফারা • সাত উল্লাহ শাহ (বোখারী) রহমান • সার আব্দুর •সার আব্দুল কাদির রসুল • আব্দুল আজিজ মিয়া • আব্দুল করিম খান সাহেব সাহেব • আব্দুল কাউয়ুম আনসারী • আব্দুল গণি দার • আব্দুল গফফার খান •আব্দুল বারি • মৌলানা মোহা. আব্দুল বারি • আব্দুল মুজিদ খাজা • আব্দুর রহমান সাহেব • নবাব আব্দুল লতিফ • আব্দুল লতিফ ফারুকী • আব্দুল হারি মিয়া • আব্দুল হামিদ খান • স্যার আব্দুল হালিম গজনভী সৈয়দ আব্দুল্লাহ বেরলভী • ডঃ সেখ আব্দুল্লাহ • আব্দুল্লাহ সেখ মুহাম্মদ • আব্দুল সামাদ খান • २०. আবুল কালাম আজাদ • আব্বাস তায়েবজী • আমীর আহম্মদ খান • আলতাফ হোসেন • স্যর আলি ইমাম • আলি মুহাম্মদ খান • আল্লাদিয়া যান • আল্লা বক্স সমক • আল্লামা মাশকীকী • স্যর আহমদ খান সাইয়েদ • জিয়াউদ্দিন আহমদ • সৈয়দ সুলতান • স্যর আহমদ • মৌলভী আহমদুল্লাহ • আসফ আলি • আসাদুল্লাহ খান গালিব • ইউসুফ জাফর • মেহের আলি • ইউসুফ জাফর মিরওয়াজ • স্যর মুহাম্মদ ইকবাল ইফতিকার উদ্দিন মিয়া • হাফিজ মুহা. • ইবরাহিম • ইব্রাহিম রহিমতুল্লাহ • ইমাম সৈয়দ হাসান • ইয়াকুব হাসান • ইসমাইল ইবরাহিম চুন্দ্রিগার • নবাব ইসমাইল খান • স্যর মুহা. ইসমাইল মির্জা • ইসমাইল মোহামেদ • এ. কে. ফজলুল হক • সার ওয়াজির হাসান • মৌলানা ওবাইদুল্লাহ সিন্ধী।
এঁরা ছিলেন ভারতের জাতিয় আন্দোলন, জাতিয় জীবনে ও জাতিয় শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণকারী। কোন দেশে যদি জ্ঞানী গুণী বিজ্ঞরা ঠাঁই না পান সে দেশের সর্বনাশ অনিবার্য লেখকরা হয়ে ওঠেন ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা। কবিরা বলেন, আমরা নবীর চেয়েও আগুয়ান। তাদের যুক্তি নবীরা আল্লাহর আদেশ ছাড়া কিছু করেন না, বলেন না কিন্তু কবিরা স্রষ্টা প্রদত্ত প্রতিভার বলে সরাসরি সোজাসুজি ভবিষ্যৎকে তুলে ধরেন। দার্শনিকরাও তাই। কিন্তু প্রশ্ন যাঁরা একথা বলেন, তাঁরা স্রষ্টাকে অস্বীকার করেন বলেন না। ভাল পাঠক হলে ভাল সমালোচক হওয়া যায়। ভাল পাঠক বিজ্ঞ জ্ঞানীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী। সেরূপ ভাল পাঠক হলে ভাল শিক্ষক হবেন। শিক্ষার সংগে সম্পর্ক না রেখে যারা শিক্ষক হতে চান তারা ছাত্র, অভিভাবক, সমাজ, দেশ, জাতি, ধর্মকে ঠকাচ্ছেন। তাদের শাস্তি ফাঁসি নয় তাদের আরো অধিক যন্ত্রণা দায়ক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। যেমন সম্রাট বাবরকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার চক্রান্ত করলে তিনজন বিষ প্রয়োগকারী ধরা পড়লে মোগল সম্রাট বাবর বিচার করেন তিন জনের জন্য দৃষ্টান্ত মূলক তিন প্রকার শাস্তি। প্রথম জনের শাস্তি গাছে মাথা নিম্ন মুখী ঝুলিয়ে কসাই খানার ছাগল ঝোড়ার মত পা থেকে চামড়া ঝোড়া, সেই সংগে সেখানে নুন পানি ঢালা। দ্বিতীয় জনের শাস্তি দুটি হাতির পিছনের পায়ে দুটো ঠাং বেঁধে বিপরীত দিকে তাড়ান। তৃতীয় জনের শান্তি বড় কড়ায়ে তেল গরম করে তাতে ডুবিয়ে দিয়ে মাছ ভাজা করা। আজকে পশ্চিমবঙ্গে ৬০ বৎসর স্বাধীনতা অতিক্রম হবার পরও একটা শিক্ষানীতি
কখনও স্কুল ফাইনাল, কখনও মাধ্যমিক, কখনও একাদশ শ্রেণিতে প্রথম ফাইনাল, কখনও একাদশ কখনও দ্বাদশ, কখনো P. U. কখনো তিন বছরের স্নাতক কোর্স কখনও দু'বছরের। কখনো স্নাতকে ইংরেজী বাধ্যতামূলক কখনো অফসোনাল। কখনও স্নাতকে ভাষা বাধ্যতামূলক কখনও বাধ্যতামূলক নয়। কখনো মে মাসে বিদ্যালয় সেসন কখনও জানুয়ারীতে সেসন। কখনো বাধ্যতামূলক কর্মশিক্ষা কখনো অপসোনাল। এবার আমাদের মাথায় ভূত চেপেছে সরলমতি ছাত্রছাত্রীদের যৌন শিক্ষা দিতে হবে।
পৃথিবীর মানব ধারণের বয়স কমপক্ষে সাড়ে ন'হাজার বছর। (আদমের পৃথিবীতে আগমন) যে পদ্ধতি এই মানবের জন্ম সাইন্টিফিকভাবে বা অন্য কোন ভাবেই তার পরিবর্তন পরিবর্ধন হয়নি। একই প্রক্রিয়াতে মানুষ তার সহজাত প্রবৃত্তিতে শিখে নেয় যৌন মিলনের দ্বারা অন্য জীবজন্তুর মত মানুষের বংশ বৃদ্ধি হয়। যদি যৌন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে চাই তাহলে অন্যায় যৌন মিলন কেন্দ্রগুলোকে বন্ধ করলেই এর সমাধান হতে পারে। বাড়ি খোলা রেখে দু'একটা চোরকে ধরে শাস্তি দিলেই চুরি কমবে না। ঘরে বাইরে সাবধান হলেই চুরি কমবে।
যেমন আধুনিক শহর গড়তে গেলে আধুনিক শহর প্রকল্পকেরা করা মনে করেন যেমন জলপথের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন, তেমনি নিষিদ্ধ পল্লীর প্রয়োজন, কেননা দূরদূরান্ত থেকে যে সমস্ত কর্মী জলযানে আসবেন তাঁরা দৈহিক মানব ক্ষুধা মেটাতে সমাজকে না দূষিত করে ফেলে। সে জন্য এ নিষিদ্ধ পল্লী। আচ্ছা যদি প্রশ্ন তুলি নিষিদ্ধ পল্লীতে দেহজীবীরা কোথা থেকে আসবে, তারা তো আমাদেরই ঘরের কোন মেয়ে। নিজের মা, বোন, মেয়ে যৌনপল্লীতে থাকে। ইজ্জত বেচে খাক এটাই আমরা চাইব? যৌন শিক্ষা অর্থ এখানে থিয়রিটিকাল জ্ঞান নিয়ে প্রাকটিক্যাল জ্ঞান নিতে তাদের উৎসাহিত করা বা এগিয়ে দেওয়া, আরও খোলাসা করে বলতে, নিষিদ্ধ পল্লীতে যাওয়া এবং ছেলেমেয়ে অবাধ মেলামেশা করা আর অবাঞ্চিত সন্তানকে রক্ষা করার কায়ন জানিয়ে দেওয়া। সুইডেনে নারীরা আন্দোলন, মিছিল করে দাবী জানাচ্ছে আমাদের উপরাঙ্গে খোলা অবস্থার পথে বের হবার ক্ষমতা দিতে হবে। পুরুষ দাবী জানিয়েছে মহিলা কর্মচারীদের টাইট জিনিস পরে অফিসে আসা চলবে না। কলকাতায় বিশ্ব দোহাপজীবীদের সম্মেলন হয়ে গেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দেহোপজীবীরা হাজির হলে কলকাতার পায়ার থেকে জন ১২ পুরুষ দেহোপজীবী হাজির হয়ে প্রবেশাধিকার চায়, এতে অবাক হবার কিছু নেই। কেননা এক স্বামীতে আধুনিক শিক্ষিত মহিলারা সন্তুষ্ট থাকতে পারছে না। তাই যৌন শিক্ষা মানুষের গুপ্ত যৌন ক্ষুধাকে জাগিয়ে দিতে চাইছে, চাইছে পৃথিবীকে নরক তৈরী করতে। মেচেদার এক গেষ্ট হাউসে রাত্রী যাপন করতে গিয়ে দেখি বোর্ডারদের জন্য যেমনি সাবান, পেষ্ট ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে তেমনি বাথরুমে যোগানো রয়েছে দু-প্যাকেট জন্মনিরোধক। নাকি সরকারি আইনে এটা রাখতে সমস্ত আবাসিক হোটেল বাধ্য।
তাই সখেদে আমি বলেছিলাম এখনকার চলতি সব থেকে বড় মিথ্যা কথা, শিক্ষা আনে চেতনা, চেতনা আনে পরিবর্তন, আর পরিবর্তন আনে বিপ্লব। এটা সঠিক হবে সুশিক্ষা আনে সুচেতনা, সুচেতনা আনে সুপরিবর্তন আর সুপরিবর্তন আনে সঠিক বিপ্লব। আমাদের শিক্ষার সংগে সুশিক্ষার প্রয়োজন। শিক্ষা বিশারদরা যেমন শিক্ষা নীতি গ্রহণ করতে পারছে না। তেমনি শিক্ষা সিলেবাসও। কর্মশিক্ষা যেমনি কর্ম করতে শেখায় না, শেখায় ফাঁকি দিতে। চুরি করতে। মিথ্যা বলতে। তেমনি শারীর শিক্ষা, ছাত্রছাত্রীদের দেহ অংগের প্রদর্শনী। হেলে দুলে, অন্যভাষায় এ এক মজাদার নাচন কুঁদন।
বিশ্বকোষের দ্বিতীয় খণ্ডে বেশী করে জীবনী ঠাঁই পেল। কবি, লেখক, সাহিত্যিক, আল্লাহওয়ালা, নবী, পীর, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এদের জীবন দ্বারা আমাদের জীবন গঠন হোক।
লেখক হিসাবে শতাধিক বই-এর অভিজ্ঞতা নিয়ে পাঠক হিসাবে সীমাহীন বইয়ের পাঠক হয়ে, মানুষের সংগে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের আশাই সবরকম মানুষের সংগে মিশেছি। কিন্তু মানুষের সংগে বাসা বাঁধিনি। ধর্মীয় বহু সংগঠন গড়ে উঠেছে যেমন হাক্কানী, হেজবুল্লাহ, তবলীগ, রাজনৈতিক বিভিন্ন দল আরও বিভিন্ন শ্রেণির সংগঠন গড়ে উঠেছে কিন্তু কোন সংগঠনে টিকি বাঁধিনি। মাদ্রাসার শিক্ষকতা করতে নদিয়া থেকে উত্তর ২৪পরগণায় ছুটতে হয়। সেখান থেকে কলকাতায় কখনও পাবলিশার্সের বাড়ি, দোকান। কখনও আকাশবাণী। কখনও দূরদর্শন কেন্দ্র। কখনও দৈনিকের অফিসের (প্রতিদিন, স্টেটসম্যান) খোঁজে, দার পরিগ্রহ করে সংসার জীবন যাপন করা হল না। আমি মনে করি এক একটা বই আমার এক একটা পুত্র কন্যা। ১৯৭১ তে প্রথম বই প্রকাশ 'প্রশ্নোত্তরে ভারত ও ইসলামের ইতিহাস' ক্রমে অর্ধ শতকে অতিক্রম করে আল্লাহর রহমতে শত পুস্তক লিখতে বিশ বছর অতিক্রম হলেও এর মাঝে অনেক বিষ যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। পড়েছিলাম শিক্ষাগত ও বৈষয়িক উন্নতিতে দুজন মাত্র হিংসা করে না। দুজনের একজন নিজ পিতা দ্বিতীয়জন শিক্ষক। আর সব থেকে বেশী শত্রুতে পরিণতি হয় সহকর্মী আর অশিক্ষিত বন্ধু। সমাজে প্রচলিত কথার প্রমাণ আমি বারবার পেয়েছি। তবে বড় হতে গেলে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয় অনেক গরল গলধকরণ করতে হয়। আমার লেখার বিষয় মূলতঃ ইসলাম তথা ধর্ম ও সমাজ। সমাজ কিছু সহজে দেয় না। আমাদের মত মানুষকে হতে হয় সমাজের 'ঝাড়ুদার' সমাজের নোংরা লোকেরা নোংরা করবে আর আমাদের মত মানুষ পরিচ্ছন্ন করবে। যে পুরস্কার সমাজ দেবে সে পুরস্কার কহতব্য নয়। যেমন পুরস্কার পেয়েছিলেন অধ্যাপক বিষ্ণু দে। গর্ভমেন্ট কলেজের ইংরাজী ভাষার অধ্যাপক হয়ে বাংলায় ভাষায় কবিতা লিখতেন। বয়স কালে বাংলা তাঁকে ঠাঁই দেননি, বিহারে বাসস্থান হয়।
💥💥💥💥💥💥💥💥💥
#ইসলাম #abdulmusrefkhan #মুসলমান #ইচ্ছেডানা #মহিষাদল #পাঁশকুড়া
0 Comments