হজরত হাসান বসরী র.-এর উপদেশ :

হজরত হাসান বসরী র.-এর উপদেশ :

→ তোমাদের চিন্তা শক্তি তোমাদের জন্য একটা স্বচ্ছ দর্পন স্বরূপ। এ চিন্তা শক্তি দিয়ে তোমরা তোমাদের ভালোমন্দ কাজের পরিমাপ করতে পারবে। এর সঙ্গে সদিচ্ছা থাকলে তোমরা গতানুগতিক ধারার পরিবর্তন করতে পারবে। সাধারণ ইমান ও কিছু পরিমাণ নেক আমল দ্বারা বেহেশত লাভ করা সম্ভব নয়। যারা এটা ভাবে তারা শুধুমাত্র কল্পনার রঙিন জাল বুনছে। জানা দরকার সীমাহীন সুখের স্থান বেহশত, তা সামান্য কিছু আমল দ্বারা লাভ করা যাবে না। এই বেহেশতের জন্য কঠোর সাধনা ও নেক পরিচ্ছন্ন নিয়তের প্রয়োজন।
→ তোমার পরামর্শদাতা লোক নির্বাচনে অত্যন্ত সতর্ক থাক। যে সমস্ত লোকের কথা যুক্তি ও উদ্দেশ্য বিহীন তার কাছ থেকে কোন পরামর্শ নেবে না। এরূপ মানুষ সকলের জন্য বিপদ সদৃশ্য। এদের দ্বারা তোমার বিপদগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা অধিক। আল্লাহ্ তায়ালার অপার মহিমা স্মরণ করা, তাঁর অপচ্ছন্দনীয় কাজ হতে দূরে থাকা সর্বোত্তম কাজ। এক পলকের জন্য দুনিয়া ও ভোগ সামগ্রীর প্রতি বিতৃষ্ণ হওয়া হাজার হাজার বৎসর রোজা নামাজ অপেক্ষা উত্তম। 
• বেইমানরা ভাবে দুনিয়াকে ভালোভাবে চেনা দরকার, দুনিয়া চেনাই তখন তারা সদাসর্বদা সচেষ্ট থাকে এবং দুনিয়াকে পুরা মাত্রায় ভালোবেসে ফেলে এসময় সে আল্লাহর সঙ্গে স্থাপন করে চরম শত্রুতা।
→ যদি কোন ব্যক্তি ভালো শ্রেণির সঙ্গে ওঠাবসা করে ও সংসর্গ স্থাপন করে তাহলে বুঝতে হবে সে নিজেও ভালো লোক, আর যদি সে মন্দ শ্রেণির লোকের সঙ্গ ওঠা বসা চলাফেরা করে তাহলে বুঝতে হবে সে মন্দ লোক । 
→ যারা শুধুমাত্র ধনদৌলত, সোনা রূপার লোভে মত্ত হয়ে ন্যায়াচার, সৌজন্য, বদান্যতা, স্নেহ মায়া, সহানুভূতি এবং পরোপকার প্রভৃতি সদগুণকে জীবন থেকে দূর করে দেয় তারায় সর্বাপেক্ষা হেয় ও ঘৃণিত লোক। মানুষের স্বকৃতি, অনুগমন ও অনুসরণ কারো জন্য যোগ্যতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় নয়। অনেকে ধারণা করে, এত বেশী লোক যখন অনুসরণ ও প্রশংসা করছে তখন কিছুতেই এ অযোগ্য লোক নহে। কারো যোগ্যতা ও খাঁটিত্ব চিনতে হলে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং মেলামেশার মধ্যে দিয়ে দেখলেই তাকে যোগ্য ও অযোগ্য বলে চেনা যাবে।
→ অসৎ লোকের সংসর্গ খুব খারাপ জিনিস। এই সংসর্গ সৎলোক ও নেককারদের প্রতি কুধারণার সৃষ্টি করে দেয়। যারা প্রকৃত দরবেশ চিনতে না পেরে ভণ্ড দরবেশদের দরবারে অবস্থান করে এবং সুফী নামধারী ছদ্মবেশীদের সাথে ওঠাবসা করে। সে খাঁটি দরবেশ এবং সুফীদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। কারণ নকল সোনার চাকচিক্যে ঠকে ঠকে মানুষ খাঁটি সোনাকে নকল বা মেকী বলে ভাবতে শেখে।
→ গীবত সর্বাপেক্ষা দোষনীয় ও মারাত্মক পাপ কাজ। তবে তিন ব্যক্তির পিছনে নিন্দা গীবত বলে গন্য নয়। 
ক. লোভী ও ইন্দ্রিয়াসক্ত খ. যে সর্বদা পাপেরত থাকে, 
গ. অত্যাচারী নেতা।
→ বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে দুনিয়াকে বিধ্বস্ত করে তার ভগ্নস্তূপের ওপর পরকালের অট্টালিকা নির্মান করে এবং দুনিয়ার মোহে মত্ত হয়ে পরকালকে নষ্ট করে না আর পরকালকে নষ্ট করে দুনিয়ার প্রাসাদ গড়তে মত্ত হয় না।
 • অন্যের মুখাপেক্ষী না হতে চাইলে অল্পে তুষ্ট হওয়া আবশ্যক। যে অল্পে তুষ্ট নয়, সে আজ হোক কাল হোক পরমুখাপেক্ষী হতে বাধ্য।
যেখানে দোজখ থেকে রক্ষা ও বেহেশত লাভের আশা থাকে না তাকে প্রকৃত ধৈর্য ও বৈরাগ্য বলে।
• এখলাস, অল্পে তুষ্টি এবং ধৈর্য এই তিনটি জিনিস যার মধ্যে থাকবে তার পুরস্কার একমাত্র আল্লাহই জানেন।
মানুষ অপেক্ষা চতুষ্পদ জন্তু ছাগল উত্তম। কেননা রাখালের ডাক পেলে খাবার ফেলে ছাগল তার প্রভুর দিকে ছুটে যায়। কিন্তু মানুষ পার্থিব মোহে প্রভুর দিকে এতটুকু অগ্রসর হতে ভুলে গেছে।
হাসান বসরীর ধারণায় ধৈর্য দু'রকম
১. দুঃখ কষ্ট বিপদে আপদে ধৈর্য ধারণ করা।
২. আল্লাহ তায়ালার নিষিদ্ধ বস্তু ও বিষয়ের প্রতি ধৈর্য ধারণ করা।
#Islam #content #collection #abdulmusrefkhan#panskura

Post a Comment

0 Comments