রক্তাক্ত রবিবার।

 রক্তাক্ত রবিবার।

                              ১৯০৬ খ্রীঃ ৩রা জানুয়ারী সেন্ট পিটার্সবার্গের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবির ভিত্তিতে এক শ্রমিক ধর্মঘটের সূচনা করে। ৯ই জানুয়ারী, রবিবার ফাদার গ্যাপন নামক জনৈক ধর্মযাজকের নেতৃত্বে সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রায় হাজার শ্রমিকের এক আবেদনপত্র নিয়ে শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা সহ জারের শীতকালীন প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, তাদের তিনটি দাবি ছিল) রাজনৈতিক বন্দিনের মুক্তি, ২) সংবিধান সভার আহ্বান এবং ) কারখানায় আটঘন্টা কাজ।

জারের পুলিশ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের উদ্দেশ্যে নির্বিচারে গুলি চালায় এতে প্রায় এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক নিহত হয়। এই ঘটনারক্তাক্ত রবিবার' নামে খ্যাত। পরে জানা যায়, ফাদার গ্যাপন ছিলেন পুলিশের চর। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয় ভয়ঙ্কর। সারা দেশে বিপ্লবের আগুন জ্বলে ওঠে এবং ব্যাপক হিংসাত্মক আন্দোলনের সূচনা হয়। জানুয়ারী মাসের শেষে লক্ষ শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেয়। ৫০ হাজার শ্রমিক রাজপথে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। শিক্ষক অধ্যাপক, আইনজীবি, ইঞ্জিনিয়ার প্রভৃতি শিক্ষিত মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। গ্রামাঞ্চলের কৃষকেরা জমিদারদের গৃহে অগ্নিসংযোগ করে এবং সেনাবাহিনীর একাংশ বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেয়। ১৯০৫ খ্রীঃ জুন মাসে রুশ যুদ্ধজাহাজ পোটেমকিন-এর নাবিকরা বিদ্রোহ ঘোষনা করেন। বিদ্রোহীদের হাতে জারের পিতৃব্য গ্রান্ড ডিউক সারগাস নিহত হন। ১৯০৫-এর ২০-৩০শে অক্টোবর ধরে রাশিয়ায় সাধারণ ধর্মঘট চলে। ইতিপূর্বে রাশিয়ায় এমন ব্যাপক ধর্মঘট আর কখনও সংঘটিত হয়নি। এই বিপ্লবের সময় শ্রমিকরা রাশিয়ার বিভিন্ন অংশেসোভিয়েতগঠন করে বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। এক কথায় সারা দেশে প্রশাসন ভেঙে পড়ে এবং জারতন্ত্র চরম সংকটের সম্মুখিন হয়।

Post a Comment

0 Comments